somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জানি- “হাত বাড়ালেই পাব না”-১

০৮ ই এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সময় কি নিদারুন, বয়ে যায় কেমন করে!
অতীতের তীর হতে প্রবাহ তার নিত্যদিনের
নতুনের পথে । সেই সময়ের পানে ফিরে তাকাই যখন
দেখি চেয়ে, পাঁচ বছর হয়ে গেল, অবুঝ বোনটি আমার;
তুই নেই এ মায়াকাননে । কত তাড়াতাড়ি চলে গেলি তুই
আমাদের একাকী ফেলে । হায়, কেন এমন হল ?
তোর আদর মাখা হাত আমার কপালে আর
দেয়না ছোয়া, মিস্টি হাসিতে ভরে না আমার ঘর ;
ভাইয়া, এই ভাইয়া ওঠ না । মধুর প্রশ্রয়ে
আমার আলস্য আনন্দে, তোর জল ঢেলে দেয়া;
খুবে বেশি অনুভব করি এখন । মমতার ছোয়া
এখন খুঁজে যে পাইনা কোথাও! মনে পড়ে তোর
আমি যখন ধমকে দিতাম তোকে, তুই হাসতি শুধু ।
মনে পড়ে, ছোটবেলায় কোন বিয়ের ছবি দেখলে
তুই বলতি, এইরকম লাল টুকটুকে বেনারসি পড়ে
আমি যাব শ্বশুর বাড়ি । আলতা রাঙা পায়ে
বাজবে রূপোর মল রিনিক ঝিনিক । আমি কপট রাগে বলতাম,
আমায় ফেলে চলে যাবি তুই ?? তোর কাদকাদ চোখে তখন
অশ্রুর আনাগোনা । হেসে বলতাম- পাগলি মেয়ে কোথাকার ;
আমি তো মজা করলাম । তখন তুই বলতি,
“না ভাইয়া দেখিস, তোকে ফেলে আমি কোথ্থাও যাব না ।
সঙ্গে করে নিয়ে যাবো তোকে, তুই দেখিস”।

মাঝে মাঝে ভাবতাম, আমি তোর ছোট না তুই আমার !
এমন ভাবে গুছিয়ে রাখতিস আমায়;
ঘরদোর থেকে শুরু করে বোহেমিয়ান এই আমাকে-
তুই দিতি নতুনের ছোয়া । সেই ছোট্ট বেলায় মা মারা গেলেন;
বোধহয় জানতেন তিনি, এঘর দিব্যি টিকে যাবে
তাকে ছাড়াও, তোরই জন্যে। তাই তার নিশ্চিন্ত স্বর্গযাত্রা !
মাঝরাতে পড়ার ফাকে চা চেয়ে বারবার,
অনেক জ্বালিয়েছি তোকে । মাঝে মাঝে চুরি করে টাকা নিতাম
তোর পার্টস থেকে । টের পেয়েও কোনদিন বলিসনি কিছুই ।
আজো মনে পড়ে, সিগারেটে টান দিয়ে আমি বারান্দায়
উদাস দুপুর, তুই এসে হেসে বললি, বাবা যে ঘরে
সে খেয়াল আছে । আমি ভীষণ লজ্জায় ইতস্তত ;
ফেলে দে তাড়াতাড়ি, এটাও কি বলে দিতে হবে ??
বলে গেলি তুই, হুশ ফিরে পাওয়া আমার লাজুক হাসি ।
খুব মনে পড়ে আজ সেই দিনগুলোর কথা ।

ছোট্ট বোনরে আমার, এত মমতা কেন দিয়েছিলি তুই ?
কেন আমায় ফেলে গেলি একা করে ?
আজ দুটো বছর ঘরে যাইনা আমি । কেন যাব আমি ?
ঘরে গেলেই শুধু মনে হয় তোর কথা । মনে হয়
তুই আর নেই । জানি হাত বাড়ালেই আর পাব না তোকে
আমি পারব না তোকে লালশাড়ি কিনে দিতে । আর কেউ তুলে রাখা
মাছের টুকরো দেবে না আমার পাতে । আর কোনদিন
অশ্রুভেজা চোখে কেউ আসবে না আমার বুকে ।
আর কোনদিন ভালবাসতে পারব না তোকে
আমার মতন করে । বিষন্ন সন্ধ্যায়, ক্লান্ত দুপুরে
বিরহ বেদনায় আমার কেউ দেবেনা সান্তনা, কারো আচলে
আমার হবে না ঠাঁই, সন্তানরূপী ভাই হয়ে ।

তারিখ : ৫/৪/২০১১

আপনারা সবাই জানেন, প্রিয় ব্লগার নষ্টছেলে ভাইয়া একটা ব্লগ লিখেছিলেন, মাস তিনেক আগে
জানি হাত বাড়ালেই পাবো না এই নামে । তো লেখাটা পড়ার পর আমার মনে হয়েছে, লেখাটি কবিতা হয়ে ওঠার অপেক্ষায় আছে । তো আমি নষ্ট ভাইয়াকে বললাম আমি কবিতাটি লিখতে চাই । উনি আমাকে অনুমতি দিলেন । তাই এই কবিতাটি লেখা ।

কবিতাটি একটি শোক কবিতা । উনার বড় বোন কিছুদিন আগে স্বর্গত হন । তো পিঠাপিঠি ভাইবোন ওনাদের অন্তরঙ্গতা আমি কবিতায় ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করেছি । তবে একটা কথা কবি হিসেবে আমি কিছু স্বাধীনতা নিয়েছি । আপুকে একানে ছোট হিসেবে দেখিয়েছি । আর বেশ কিছু বিষয়ে কল্পনার আশ্রয় নিয়েছি । আর সবশেষে নষ্ট ভাইয়াকে বলছি, আমরা কবিরা খুব খারাপ । অন্যের দু:খ নিজের লেখায় টানি, কিন্তু অনুভব করার চেষ্টা করি না । এখানে তাই হচ্ছিল, কিন্তু শেষমেষ স্রষ্টা আমায় দায়মুক্তি দেবার জন্যেই বোধহয় চোখে জল আনলেন । সবাই দোয়া করবেন আপু যেন জান্নাত বাসী হন । ভাল থাক ভাইয়া ।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:৫৬
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্বেতশুভ্র সোর্ড লিলি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ২২ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৫:৩৪



সোর্ড লিলি বা মেক্সিকান সোর্ড লিলির নামের সাথে লিলি থাকলেও এটি আসলে লিলি বা লিলি পরিবারের কোনো ফুল নয়। কিভাবে কিভাবে যেনো এর নামের সাথে লিলি জুড়ে গেছে। এতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদশে কেন আমেরিকার পকেটে?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২২ শে মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৩






সামু ব্লগের কতজন ব্লগার দেশের বর্তমান অবস্হা সঠিকভাবে অনুধাবন করে রাজনৈতিক পোষ্ট লিখছেন? এই দেশের ১৯ কোটীর মাঝে শতকরা কতভাগ মানুষ জানেন, আধুনিক বিশ্ব্বের দেশগুলো কিভাবে চলে?

ড: ইউনুস কেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ কেন দাবী করলো না এনসিপি ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২২ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১১:৩৫


বাংলাদেশের রাজনীতির মঞ্চে আওয়ামী লীগ দলটি এখন ফুটবলের মতো ব্যবহৃত হচ্ছে। আওয়ামী লীগ কে নিষিদ্ধ না পুনর্বাসন ইস্যুতে বড়ো ছোটো সকল রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিভক্তি দেখা যাচ্ছে। নবগঠিত রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

"মিস্টার মাওলা"

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ২৩ শে মার্চ, ২০২৫ ভোর ৫:০৯


বিটিভিতে খুব সম্ভবত আগে একটি বাংলা ছবি প্রচার করা হতো , নাম 'মিস্টার মাওলা'। নায়ক রাজ রাজ্জাক, অভিনিত ছবির সার-সংক্ষেপ কিছুটা এমন: গ্রামের বোকাসোকা, নির্বোধ ছেলে মাওলা‌। মাকে হারিয়ে শহরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সুনিতা উইলিয়ামস: মহাকাশ অনুসন্ধানে অনুপ্রেরণার যাত্রা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ১১:২৪





সুনিতা উইলিয়ামস কে? যদিও তুমি তোমার পাঠ্যপুস্তকে সুনিতা উইলিয়ামসের কথা শুনেছো, তবুও তুমি হয়তো ভাবছো যে সে কে ?

বিখ্যাত নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামসের ক্যারিয়ার ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সেরা, এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×